ব্যাংক ভাইবার প্রস্তুতিঃ
ভাইবা চাকরির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। প্রায় সকল চাকুরিতে ভাইবা নেয়া হয়। বিশেষ কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ভাইবা চাকরিতে যোগদানের পূর্বধাপ। আপনি ভাইবাতে ভাল করলেন তো আপনার চাকরি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেল। তবে তীরে এসে তরী ডোবার মত ঘটনাও ঘটে থাকে। অর্থাৎ ভাইবাতে খারাপ করে চাকরিটা হাতছাড়া করা।
.
সম্প্রতি কিছু ব্যাংক ও নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভাইবা চলমান। ভাইবার প্রস্তুতিকে আমরা মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করতে পারি। এক- জ্ঞান বিষয়ক। এটা হতে পারে আপনার অনার্সের সাবজেক্টের জ্ঞান, ব্যাংকিং/
.
ভাইবা বোর্ডে যারা থাকেন তাদের বেশিরভাগই একই মনের অধিকারী এবং গড় বয়স ৫০ বছর। আমাদের কাছে যা স্বাভাবিক তার কিছু কিছু বিষয় তাদের কাছে বিরক্তকর মনে হতে পারে। একটা ট্রেনিংয়ে আমাদের সাথে একজন অংশগ্রহণকারী ফুলহাতা শার্টের হাতা দুই ভাজে গুটিয়ে পড়ছিলেন। সেটা দেখে একজন ফ্যাকাল্টি মেম্বার তাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাস করলেন “আপনি কি মারামারি করতে আসছেন?” আমার কাছে মনে হয়েছিল শার্টের হাতা গুটিয়ে রাখলে অসুবিধা কোথায়? বিআইবিএম এর বর্তমান ডিজি স্যার দুইটা কঠিন নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এক- অবশ্যই স্যু পরতে হবে। দুই- গেঞ্জি পরা যাবে না, শার্ট পরতে হবে। এই নিয়মটা লাইব্রেরীতে পড়ার সময়ও আমাদের মানতে হত। স্যু পরে না আসার জন্য আমাকে দুইদিন স্যার লাইব্রেরী থেকে বের করে দিয়েছিল। আর গেঞ্জি পরে আসায় আমার বন্ধুকে স্যার রেগে বলছিল “খালি গায়ে আসলেই পার”। বুঝেন অবস্থা।! তো গল্প বাদ দিয়ে চলেন কাজের কথায় আসি।
.
১. সময়, স্থান, তারিখ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ এডমিট কার্ডটা ভালভাবে পড়ুন। কি কি নিতে হবে তা লক্ষ্য করুন। রিটেন এর এডমিট কার্ড লাগবে কিনা দেখুন। সার্টিফিকেট, মার্কশীট, ট্রান্সক্রিপ্ট,
.
২. পোষাকঃ ছেলেদের চুল ছাটা থাকতে হবে সাথে ক্লিন সেভ বা দাড়ি ছাটা। ঘড়ি ব্যতিত অন্য কোন জুয়েলারি ব্যবহার করবেন না। মোবাইল ফোনটা সকালে ঘুম থেকে উঠেই সাইলেন্ট করে ফেলুন। শার্ট হবে ধবধবে সাদা। লাল বা কালো টাই পরবেন। শার্টের বুক পকেটে কলম ছাড়া কিছু রাখবেন না। প্যান্ট হবে কালো সাথে কালো পলিশ করা জুতা। ধার করে হলেও কোট পরবেন। বেল্ট অবশ্যই কালো হতে হবে। চশমা থাকলে কোনটা পরবেন আগেই ঠিক করে রাখুন। মেয়েরা অবশ্যই শাড়ি পরবেন। শাড়ি হালকা রংয়ের হতে হবে। সীমিত আকারের সাজগোজ করবেন। জুতা ম্যাচিং হতে হবে। সিম্পল অলংকার ব্যবহার করবেন।
.
৩. ভাইবা বোর্ডঃ কখনোই চাকরি নিয়ে সিরিয়াস হবেন না। আপনার টার্গেট থাকবে ভাইবা ভালভাবে দেয়া। সবসময় মনে করবেন আমি সবার সেরা ভাইবাটা দিব। রিটেন ভাল হয়নি, আমার বয়স শেষ বা আমার কোটা নাই এ চিন্তা মাথায় আনবেন না। ভাইবা বোর্ডে কখনই আপনার দূর্বলতা প্রকাশ করবেন না- যেমন বয়স শেষ বা অসহায় পরিবার। হাসি মুখে প্রবেশ করবেন। প্রথমেই দেখে নিবেন বোর্ডের চেয়ারম্যান কে(সাধারণত মাঝে বসেন)। আপনার হাত থাকবে আপনার উরুর উপর। বসা এবং উঠার সময় চেয়ারে শব্দ করবেন না। যে প্রশ্ন করবে তার চোখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন শুনবেন। তারপর উত্তর দিবেন। উত্তর দেয়ার সময় সব সদস্যের দিকে আই কনটাক্ট করবেন। ভয়েস হবে একটু উচ্চ যেন সবাই শুনতে পায়। আপনার উত্তর স্যারদের পছন্দ না হলে আরগুমেন্ট করবেন না। বাংলায় প্রশ্ন করলে ইংরেজীতে উত্তর দেয়ার প্রয়োজন নাই। নাক চুলকানো, মাথা নাড়ানো এধরনের মুদ্রাদোষ পরিহার করুন।
.
পরিশেষে, ভাইবা বোর্ডে বাজিমাৎ করতে হলে কিছু টেকনিক অবলম্বন করতে হয়। আপনার কোন স্ট্রং পয়েন্ট থাকলে তার প্রসঙ্গ না আসলেও উল্লেখ করবেন। যেমন আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
.
সবার সফলতা কামনায়
আনোয়ার পারভেজ, এসিসিএ
প্রিন্সিপাল অফিসার, জনতা ব্যাংক লিমিটেড
Industry is the key of Success.
No comments:
Post a Comment